বঙ্গোপসাগরে ইলিশসহ সব ধরনের মাছ শিকারে ২২ দিনের জন্য নিষেধাজ্ঞা শুরু হচ্ছে আজ শনিবার থেকে। শুক্রবার (১৯ মে) দিনগত রাত ১২টা থেকে এ নিষেধাজ্ঞা শুরু হয়েছে। এ নিষেধাজ্ঞা চলবে আগামী ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত। নিষেধাজ্ঞা শুরু হওয়ায় বঙ্গোপসাগর ও সাগর মোহনা থেকে তীরে ফিরে এসেছেন ভোলার জেলেরা। তবে নিষেধাজ্ঞার এ ২২ দিন তাদের নামে বরাদ্দের চাল পাওয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা।
সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এ সময়ে কোনোভাবেই নদী ও সাগরে মাছ ধরা, সংরক্ষণ, পরিবহন, বাজারজাত বা মজুত করা যাবে না। নিষেধাজ্ঞা কার্যকর রাখতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে। পাশাপাশি নদী তীরবর্তী এলাকায় মাইকিং, পোস্টারিংসহ ব্যাপক প্রচার চালানো হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হওয়ার পর ভোলার বৃহত্তম মৎস্য ঘাট চরফ্যাশনের সামরাজ, নতুন সুইজ, মাইনউদ্দিন, ৫ কপাট, ঢালচর, নুরাবাদ ও বকসী ঘাটে শত শত ফিশিংবোট ও ট্রলার নোঙর করা হয়েছে। জেলেরা মাছ ধরা সরঞ্জাম গুটিয়ে ঘাটে ফিরেছেন।
জেলে বাবুলের ভাষায়, ‘প্রতিদিন নদীতে গিয়ে মাছ ধরে সংসার চালাই। এখন টানা ২২ দিন নদীতে নামা যাবে না। সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়বে। সরকার যদি খাদ্য সহায়তা দেয়, কিছুটা স্বস্তি পাওয়া যাবে।’
মাঝি জামাল উদ্দিন বলেন, ‘সাগরে মাছও নেই। শূন্য হাতে ফিরেছি। তবে মা ইলিশ বাঁচানো ছাড়া উপায় নেই। কষ্ট হলেও আইন মানতে হবে। কিন্তু সহায়তা ছাড়া টিকে থাকা দুঃসাধ্য।’
নতুন স্লুইসগেট মাছঘাটের আড়ৎদার মোস্তফা বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার কারণে প্রতিদিন লাখ লাখ টাকার লেনদেন বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। শুধু জেলেরা নয়, আড়ৎদার, শ্রমিক, বরফকল মালিক সবাই ক্ষতিগ্রস্ত। বাজার পুরোপুরি স্তব্ধ হয়ে পড়বে।’
সামরাজ মৎস্য ঘাটের সভাপতি তারেক আজিজ বলেন, ‘জেলেদের সহায়তা দেওয়া হলেও আড়ৎদার ও পরিবহন শ্রমিকদেরও নজর দেওয়া জরুরি। কারণ মাছ ধরা বন্ধ মানেই পুরো ব্যবসার চেইন থেমে যাওয়া।’
চরফ্যাশন উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা জয়ন্ত কুমার অপু জানান, নিষেধাজ্ঞা কার্যকর রাখতে প্রতিদিন নদী ও সাগরে অভিযান চালানো হবে। আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া মৎস্য আহরণে বিরত থাকা নিবন্ধিত প্রতিজন জেলেকে সরকারিভাবে ২৫ কেজি করে চাল সহায়তা দেওয়া হবে, যাতে জেলেরা কিছুটা স্বস্তি পান।